ঢাকা , রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিমানবন্দর থানা পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘হর্ন বন্ধ করা আমার দায়িত্ব নয়, দায়িত্ব হচ্ছে আইনটাকে প্রয়োগ করা’ শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন ট্রাম্প-মোদি এসে কিছু করে দিয়ে যাবে না: মির্জা ফখরুল জাপাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে ষড়যন্ত্র চলছে: জি এম কাদের এই দিনে ভারতের ১৬ সেনাকে চিতায় পাঠায় সাহসী বিডিআর জওয়ানরা : ইলিয়াস আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ আরেকটি স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা আসার সকল রাস্তা বন্ধ করবো: নাহিদ ইসলাম বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় ভারত : জয়সওয়াল রাস্তায় নামলে অনেক উপদেষ্টার দেশ ছাড়তে হবে : নুর

‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির’ আওতায় যুক্ত হচ্ছেন যারা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • বর্তমান সময় : ০৫:৩৬:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫
  • ১৫ সময় ভিউ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতের পরিবার ও আহতদের ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির’ আওতায় আনা হচ্ছে। একই সঙ্গে আগামী বাজেটে (২০২৫-২৬) বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা নতুন করে তিন লাখ বাড়ানো হবে। তাদের মাসিক ভাতার অঙ্ক বাড়বে ৫০ টাকা হারে। যদিও বিদ্যমান মূল্যস্ফীতির কশাঘাতের তুলনায় গরিব ও দুস্থ মানুষের নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা বৃদ্ধির অঙ্ক খুবই সামান্য।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি দীর্ঘদিন মূল্যস্ফীতির হার ঊর্ধ্বমুখী বিরাজ করছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতি মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি রয়েছে। সর্বশেষ তথ্যমতে ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্য দিয়েই মানুষের জীবনযাত্রা অতিক্রম করছে। এর প্রভাব দরিদ্র মানুষের ওপর পড়েছে। নতুন করে মানুষ গরিব হচ্ছে। বিশেষ করে অতি দরিদ্র ও নিু আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থায় আছে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ নিজেও বিষয়টি উপলব্ধি করে বলেছেন, সাধারণ মানুষের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিনিয়োগ না থাকায় কর্মসংস্থানও কমছে। ফলে মূল্যস্ফীতি ও অর্থ সংকট-বিপরীতমুখী অবস্থানের মধ্যেই সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হচ্ছে।

জানতে চাইলে অর্থ সচিব (সিনিয়র) মাহবুব আহমেদ যুগান্তরকে জানান, যেহেতু বিনিয়োগ না থাকায় অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি নেই এবং বিনিয়োগের অভাবে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। এছাড়া মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়ছে। এই দুই কারণে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানো দরকার আছে। আমি মনে করি সিদ্ধান্ত সঠিক আছে।

সূত্রমতে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে আগামী অর্থবছরের বাজেটে নতুন করে বয়স্ক ভাতা সুবিধাভোগীর সংখ্যা এক লাখ, বিধবা ভাতা সুবিধাভোগী এক লাখ এবং প্রতিবন্ধী ভাতা সুবিধাভোগীর সংখ্যা এক লাখ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৬০ লাখ এক হাজার জন। আগামী অর্থবছরে আরও এক লাখ বাড়িয়ে ৬১ লাখ এক হাজার এবং ভাতা ৬০০ থেকে বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে। বর্তমানে বিধবা ভাতা পাচ্ছেন ২৭ লাখ ৭৫ হাজার নারী। সেখান থেকে বেড়ে ২৮ লাখ ৭৫ হাজার এবং ভাতা ৬০০ টাকা থেকে বেড়ে ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী ভাতা সুবিধাভোগীর সংখ্যা এক লাখ বেড়ে ৩৩ লাখ ৩৪ হাজারে দাঁড়াবে। বর্তমানে ৩২ লাখ ৩৪ হাজার প্রতিবন্ধীকে প্রতি মাসে ৮৫০ টাকা হারে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এখন ভাতার অঙ্ক ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৯০০ টাকায় উঠবে। এছাড়া অন্যান্য ভাতার সুবিধাভোগীর সংখ্যাও কিছু বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এদিকে আগামী অর্থবছরে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির তালিকায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে ওই বৈঠকে। জানা গেছে আগামী অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের জন্য বরাদ্দ থাকছে ৪০৫ কোটি টাকা। তবে আর্থিক কার্যক্রমের বিষয়টি পরিচালনা করছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একটি সূত্র যুগান্তরকে জানায়, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ১৪০টি কর্মসূচি চলছে। নতুন করে জুলাইয়ের আহত ও নিহতদের এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে কিছু নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে বৈঠক থেকে একটি দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

বিমানবন্দর থানা পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির’ আওতায় যুক্ত হচ্ছেন যারা

বর্তমান সময় : ০৫:৩৬:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৭ মার্চ ২০২৫

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহতের পরিবার ও আহতদের ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির’ আওতায় আনা হচ্ছে। একই সঙ্গে আগামী বাজেটে (২০২৫-২৬) বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা নতুন করে তিন লাখ বাড়ানো হবে। তাদের মাসিক ভাতার অঙ্ক বাড়বে ৫০ টাকা হারে। যদিও বিদ্যমান মূল্যস্ফীতির কশাঘাতের তুলনায় গরিব ও দুস্থ মানুষের নিরাপত্তা কর্মসূচির ভাতা বৃদ্ধির অঙ্ক খুবই সামান্য।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি দীর্ঘদিন মূল্যস্ফীতির হার ঊর্ধ্বমুখী বিরাজ করছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতি মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি রয়েছে। সর্বশেষ তথ্যমতে ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্য দিয়েই মানুষের জীবনযাত্রা অতিক্রম করছে। এর প্রভাব দরিদ্র মানুষের ওপর পড়েছে। নতুন করে মানুষ গরিব হচ্ছে। বিশেষ করে অতি দরিদ্র ও নিু আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থায় আছে।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ নিজেও বিষয়টি উপলব্ধি করে বলেছেন, সাধারণ মানুষের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে। বিনিয়োগ না থাকায় কর্মসংস্থানও কমছে। ফলে মূল্যস্ফীতি ও অর্থ সংকট-বিপরীতমুখী অবস্থানের মধ্যেই সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হচ্ছে।

জানতে চাইলে অর্থ সচিব (সিনিয়র) মাহবুব আহমেদ যুগান্তরকে জানান, যেহেতু বিনিয়োগ না থাকায় অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি নেই এবং বিনিয়োগের অভাবে কর্মসংস্থান হচ্ছে না। এছাড়া মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে পড়ছে। এই দুই কারণে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ানো দরকার আছে। আমি মনে করি সিদ্ধান্ত সঠিক আছে।

সূত্রমতে, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিসংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে আগামী অর্থবছরের বাজেটে নতুন করে বয়স্ক ভাতা সুবিধাভোগীর সংখ্যা এক লাখ, বিধবা ভাতা সুবিধাভোগী এক লাখ এবং প্রতিবন্ধী ভাতা সুবিধাভোগীর সংখ্যা এক লাখ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন ৬০ লাখ এক হাজার জন। আগামী অর্থবছরে আরও এক লাখ বাড়িয়ে ৬১ লাখ এক হাজার এবং ভাতা ৬০০ থেকে বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হচ্ছে। বর্তমানে বিধবা ভাতা পাচ্ছেন ২৭ লাখ ৭৫ হাজার নারী। সেখান থেকে বেড়ে ২৮ লাখ ৭৫ হাজার এবং ভাতা ৬০০ টাকা থেকে বেড়ে ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিবন্ধী ভাতা সুবিধাভোগীর সংখ্যা এক লাখ বেড়ে ৩৩ লাখ ৩৪ হাজারে দাঁড়াবে। বর্তমানে ৩২ লাখ ৩৪ হাজার প্রতিবন্ধীকে প্রতি মাসে ৮৫০ টাকা হারে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এখন ভাতার অঙ্ক ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৯০০ টাকায় উঠবে। এছাড়া অন্যান্য ভাতার সুবিধাভোগীর সংখ্যাও কিছু বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

এদিকে আগামী অর্থবছরে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির তালিকায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে ওই বৈঠকে। জানা গেছে আগামী অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত ও আহতদের জন্য বরাদ্দ থাকছে ৪০৫ কোটি টাকা। তবে আর্থিক কার্যক্রমের বিষয়টি পরিচালনা করছে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন একটি সূত্র যুগান্তরকে জানায়, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ১৪০টি কর্মসূচি চলছে। নতুন করে জুলাইয়ের আহত ও নিহতদের এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে কিছু নীতিমালায় পরিবর্তন আনতে হবে। এ বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে বৈঠক থেকে একটি দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।