বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের হাজীপুর থেকে ধুনট রোড বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত উড়ালসড়ক নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের শেরপুর শহরের করতোয়া বাস টার্মিনালের পাশে এ কর্মসূচি শুরু হয়।
শেরপুর উপজেলা বিএনপির আয়োজিত এ কর্মসূচিতে দলটির নেতা-কর্মী, অঙ্গ সংগঠনসহ ব্যবসায়ী সমিতি, দলিল লেখক কল্যাণ সমিতি, শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন স্তরের অন্তত তিন হাজার বাসিন্দা অংশ নেন। সমাবেশ শেষে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার কাছে অন্তত ২০ হাজার মানুষের ‘গণস্বাক্ষর কপি’ দেওয়া হয়। পরে এই কপি গ্রহণ করেন শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান।এ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মো. সিরাজ (জি এম সিরাজ)। মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা বলেন, বগুড়া শেরপুরে প্রায় তিন লাখ মানুষের বসবাস। তাঁরাসহ পার্শ্ববর্তী ধুনট, রায়গঞ্জ, তাড়াশ, নন্দীগ্রাম ও শাজাহানপুর উপজেলার অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন শেরপুর হয়ে যাতায়াত করেন। শহরটির বুক চিরে চলে যাওয়া ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কটি সম্প্রতি চার লেনে উন্নীত করার সময় শহরে উড়ালসড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাজনৈতিক প্রভাবে প্রকল্পটি বাদ দেওয়া হয়। ফলে শহরের পূর্ব ও পশ্চিম অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
শেরপুর শহরের পূর্ব দিকে আছে হাটবাজার, বহুতল মার্কেট, ব্যাংক, ভূমি অফিস, পৌরসভা, থানা ও পোস্ট অফিস; জায়গাটি বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। অপর দিকে পশ্চিম অংশে আছে উপজেলা পরিষদ, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। মহাসড়কের বিভাজকের কারণে দুই অংশের মধ্যে স্বাভাবিক চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে, ফলে জনসাধারণের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
বক্তারা বলেন, বর্তমানে শহরের উত্তরে গাড়িদহ বাজার এবং দক্ষিণে মির্জাপুর এলাকায় দুটি আন্ডারপাস আছে। তবে এগুলোর মধ্যে দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। ফলে সাধারণ যানবাহনের জন্য এ দূরত্ব ঘুরে যাতায়াত করা বেশ কষ্টসাধ্য। সাময়িকভাবে কিছু জায়গায় বিভাজক খোলা রাখা হয়েছে। সেসব স্থান দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটে। গত জানুয়ারি মাসে দুজনের প্রাণহানি হয়েছে এবং এর আগেও অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আবার প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ফাঁকা স্থানগুলোও বন্ধ করে দেওয়া হবে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। এ অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়ানো, যানজট নিরসন, দুই অংশকে জুড়তে অন্তত দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের একটি উড়ালসড়ক নির্মাণ করা প্রয়োজন।সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কে এম মাহবুবর রহমান, বগুড়া জেলা বিএনপির উপদেষ্টা শফিকুল আলম, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সালফার টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ইউসুফ আলী, উলিপুর মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুল হাই, উপজেলা দলিল লেখক কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি এস এম ফেরদৌস প্রমুখ।