ঢাকা , সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
স্কুলছাত্রীকে ‘হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ’, রিকশায় করে নিয়ে লাশ ফেলা হয় হাতিরঝিলে এবার শেখ হাসিনার ছবি লাগানো ডাস্টবিনে ময়লা ফেললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ রাজউক উত্তরা অফিস মতিঝিলে একিভূত করার আদেশ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট খাল খনন উদ্বোধনে লাল গালিচা, ব্যাখ্যা দিলো ডিএনসিসি বিএনপির পক্ষ থেকে ইজতেমায় আগত মুসল্লীদের বিশুদ্ব পানি ও শুকনো খাবার বিতরণ বগুড়ার শেরপুর শহরে উড়ালসড়ক নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন একুশের টান দুঃসাহসী, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান জ্বলন্ত প্রমাণ: প্রধান উপদেষ্টা তৃতীয় দিনের মতো সড়ক অবরোধ তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, মানুষের ভোগান্তি ডাস্টবিনে শেখ হাসিনার ছবি, ময়লা ফেললেন প্রেসসচিব সরকারের সহায়তা নিয়ে নতুন দল গঠন করলে জনগণ মেনে নিবে না- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

কোচের বিরুদ্ধে সাবিনাদের বিদ্রোহ: বাফুফে এখন কী করবে

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • বর্তমান সময় : ০৫:৪৫:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৪ সময় ভিউ

ব্যাপারটা আমাদের আত্মসম্মানের’…এটুকু বলেই মাথা নিচু করে ফেললেন সাবিনা খাতুন। আর মাথা তুলছিলেন না। মিনিটখানেক পর মাথা তুললে দেখা যায় তাঁর চোখে পানি। কথা আর বাড়ালেন না। পিছিয়ে গিয়ে সামনে জায়গা করে দিলেন আরেকজনকে।

দৃশ্যটা গতকাল সন্ধ্যার, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবন চত্বরের। বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনার সঙ্গে তখন তাঁর সতীর্থ ফুটবলাররা। সামনে সাংবাদিকদের ভিড়, বুম আর ক্যামেরা।

ঠিক তিন মাস আগে, ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবরও বাফুফে ভবনে সাংবাদিকে ঠাসা পরিবেশে সতীর্থ খেলোয়াড়দের নিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন সাবিনা। সেদিন দাঁড়িয়েছিলেন হাসিমুখে, টানা দ্বিতীয়বার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি নিয়ে। এবার হাসিমুখে নয়, অমর্যাদা আর অপমানের যন্ত্রণা নিয়ে, চোখে–মুখে হতাশা আর কান্না নিয়ে।সাবিনা–মনিকা–মাসুরা–ঋতুপর্ণাদের এমন কান্নার একটাই উৎস—পিটার বাটলার। এই ব্রিটিশ কোচের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। মানসিক হয়রানি, উৎপীড়ন, গালাগালি, মানুষ হিসেবে অমর্যাদা করা, বডি শেমিং, দুর্ব্যবহার, ধারাবাহিক বৈষম্য, অন্যায় আচরণ…ক্যামেরার সামনে মুখে আর তিন পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যে এমন অনেক বিষয়ই উঠে এসেছে।সব মিলিয়ে সাবিনারা বলছেন, বাটলারের অধীনে অধিকাংশ খেলোয়াড়ই হতাশাগ্রস্ত, আতঙ্কগ্রস্ত। এমন পরিস্থিতিতে বাটলারের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়। এখন হয় বাটলার নারী দলের কোচ থাকবেন, নয়তো এই ফুটবলাররা দলে থাকবেন—যেকোনো একটা। তাঁরা থাকলে বাটলারকে রাখা যাবে না, আর বাটলার থাকলে তাঁরা একযোগে পদত্যাগ (আসলে অবসর) করবেন।

আর এই পুরো বিষয়টায় ফুটবলাররা এখন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের দিকে তাকিয়ে। ‘কোচ বিদ্রোহে’ অংশ নেওয়া ১৮ ফুটবলার বাফুফে প্রধানের কাছ থেকে আশু সমাধান চান। লেখায় আর বলায় সাবিনাদের মুখে যা ফুটে উঠেছে, তাতে আশু সমাধান বলতে ‘হয় কোচ, নয় আমরা’ আলটিমেটামের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথ করে দেওয়া।

দেশের ফুটবলে এমন অপ্রত্যাশিত আর নজিরবিহীন ঘটনা এমন সময়ে ঘটল, যখন বাফুফে সভাপতি দেশের বাইরে। এ মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্যে গেছেন তাবিথ। সেখানে থাকা অবস্থায়ই বাংলাদেশ নারী দলের কোচ হিসেবে বাটলারের সঙ্গে দুই বছরের নতুন চুক্তি করেছেন।

তাবিথ যুক্তরাজ্যে থাকতে থাকতেই বাটলার ঢাকায় এসেছেন কাজ শুরু করতে, আর সেটি করতে গিয়েই এই ব্রিটিশ কোচ বিদ্রোহের মুখে।

কোচের বিষয়ে ফুটবলারদের আলটিমেটাম–পরবর্তী ঘটনায় বাফুফের অবস্থান জানতে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল তাবিথের সঙ্গে। ইংল্যান্ডে অবস্থানরত বাফুফে কল কেটে দিয়ে খুদে বার্তায় পরে কথা বলবেন বলে জানান।

এরপর অবশ্য বাফুফের মিডিয়া ম্যানেজারের মাধ্যমে সভাপতির একটি বক্তব্য পাওয়া গেছে। সেটিতে লেখা, ‘খেলোয়াড়েরা আমাদের পরিবারের অংশ এবং আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না।’

বাফুফে সভাপতির এখন মন্তব্য করার চেয়ে কাজে নেমে পড়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে সেটা তারা করেছেও। করণীয় ঠিক করতে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বাফুফে। এখন দেখা যাক, তারা কী করেন!

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

স্কুলছাত্রীকে ‘হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ’, রিকশায় করে নিয়ে লাশ ফেলা হয় হাতিরঝিলে

কোচের বিরুদ্ধে সাবিনাদের বিদ্রোহ: বাফুফে এখন কী করবে

বর্তমান সময় : ০৫:৪৫:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

ব্যাপারটা আমাদের আত্মসম্মানের’…এটুকু বলেই মাথা নিচু করে ফেললেন সাবিনা খাতুন। আর মাথা তুলছিলেন না। মিনিটখানেক পর মাথা তুললে দেখা যায় তাঁর চোখে পানি। কথা আর বাড়ালেন না। পিছিয়ে গিয়ে সামনে জায়গা করে দিলেন আরেকজনকে।

দৃশ্যটা গতকাল সন্ধ্যার, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ভবন চত্বরের। বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনার সঙ্গে তখন তাঁর সতীর্থ ফুটবলাররা। সামনে সাংবাদিকদের ভিড়, বুম আর ক্যামেরা।

ঠিক তিন মাস আগে, ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবরও বাফুফে ভবনে সাংবাদিকে ঠাসা পরিবেশে সতীর্থ খেলোয়াড়দের নিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন সাবিনা। সেদিন দাঁড়িয়েছিলেন হাসিমুখে, টানা দ্বিতীয়বার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি নিয়ে। এবার হাসিমুখে নয়, অমর্যাদা আর অপমানের যন্ত্রণা নিয়ে, চোখে–মুখে হতাশা আর কান্না নিয়ে।সাবিনা–মনিকা–মাসুরা–ঋতুপর্ণাদের এমন কান্নার একটাই উৎস—পিটার বাটলার। এই ব্রিটিশ কোচের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। মানসিক হয়রানি, উৎপীড়ন, গালাগালি, মানুষ হিসেবে অমর্যাদা করা, বডি শেমিং, দুর্ব্যবহার, ধারাবাহিক বৈষম্য, অন্যায় আচরণ…ক্যামেরার সামনে মুখে আর তিন পৃষ্ঠার লিখিত বক্তব্যে এমন অনেক বিষয়ই উঠে এসেছে।সব মিলিয়ে সাবিনারা বলছেন, বাটলারের অধীনে অধিকাংশ খেলোয়াড়ই হতাশাগ্রস্ত, আতঙ্কগ্রস্ত। এমন পরিস্থিতিতে বাটলারের সঙ্গে কাজ করা সম্ভব নয়। এখন হয় বাটলার নারী দলের কোচ থাকবেন, নয়তো এই ফুটবলাররা দলে থাকবেন—যেকোনো একটা। তাঁরা থাকলে বাটলারকে রাখা যাবে না, আর বাটলার থাকলে তাঁরা একযোগে পদত্যাগ (আসলে অবসর) করবেন।

আর এই পুরো বিষয়টায় ফুটবলাররা এখন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের দিকে তাকিয়ে। ‘কোচ বিদ্রোহে’ অংশ নেওয়া ১৮ ফুটবলার বাফুফে প্রধানের কাছ থেকে আশু সমাধান চান। লেখায় আর বলায় সাবিনাদের মুখে যা ফুটে উঠেছে, তাতে আশু সমাধান বলতে ‘হয় কোচ, নয় আমরা’ আলটিমেটামের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথ করে দেওয়া।

দেশের ফুটবলে এমন অপ্রত্যাশিত আর নজিরবিহীন ঘটনা এমন সময়ে ঘটল, যখন বাফুফে সভাপতি দেশের বাইরে। এ মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাজ্যে গেছেন তাবিথ। সেখানে থাকা অবস্থায়ই বাংলাদেশ নারী দলের কোচ হিসেবে বাটলারের সঙ্গে দুই বছরের নতুন চুক্তি করেছেন।

তাবিথ যুক্তরাজ্যে থাকতে থাকতেই বাটলার ঢাকায় এসেছেন কাজ শুরু করতে, আর সেটি করতে গিয়েই এই ব্রিটিশ কোচ বিদ্রোহের মুখে।

কোচের বিষয়ে ফুটবলারদের আলটিমেটাম–পরবর্তী ঘটনায় বাফুফের অবস্থান জানতে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল তাবিথের সঙ্গে। ইংল্যান্ডে অবস্থানরত বাফুফে কল কেটে দিয়ে খুদে বার্তায় পরে কথা বলবেন বলে জানান।

এরপর অবশ্য বাফুফের মিডিয়া ম্যানেজারের মাধ্যমে সভাপতির একটি বক্তব্য পাওয়া গেছে। সেটিতে লেখা, ‘খেলোয়াড়েরা আমাদের পরিবারের অংশ এবং আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করব না।’

বাফুফে সভাপতির এখন মন্তব্য করার চেয়ে কাজে নেমে পড়াটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে সেটা তারা করেছেও। করণীয় ঠিক করতে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বাফুফে। এখন দেখা যাক, তারা কী করেন!