গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিলকে গ্রেফতার করেছেন মার্কিন অভিবাসন কর্মকর্তারা। গত রোববার (৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইউনিয়ন এ তথ্য জানিয়েছে।
গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের (ডিএইচএস) কর্মকর্তারা ফিলিস্তিনি নাগরিক খলিলকে আটক করেন। তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য স্নাতক সম্পন্ন করেছেন এবং গত বসন্তে গাজা সংহতি শিবিরের প্রধান আলোচক ছিলেন বলে ছাত্র-শ্রমিকদের ইউনিয়নের এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাবে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যার মধ্যে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছিল অন্যতম। এসব বিক্ষোভে কখনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এবং ক্যাম্পাস ভবন দখল ও ক্লাসে বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগ উঠেছে। এই বিক্ষোভের কারণে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ইহুদিবিদ্বেষের অভিযোগও ওঠে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে লিখেছেন, আমরা হামাস সমর্থকদের ভিসা ও গ্রিন কার্ড বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কার করবো।
গ্রেফতার হওয়ার সময় খলিল যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। তার মুক্তি দাবিতে হাজারো মানুষ একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছেন বলে ছাত্র-শ্রমিকদের ইউনিয়ন জানিয়েছে।
ইউনিয়ন আরও জানায়, আমরা এমন একাধিক ঘটনার খবর পেয়েছি যেখানে অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ (আইসিই) কর্মকর্তারা শুক্রবার ও শনিবার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ভবনে প্রবেশ বা প্রবেশের চেষ্টা করেছেন, যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলও রয়েছে।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় খলিলের গ্রেফতার নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ক্যাম্পাসের আশপাশে আইসিই কর্মকর্তাদের উপস্থিতির খবর পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় আরও জানিয়েছে, কলম্বিয়া সব সময় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল এবং থাকবে। দেশের বিভিন্ন শহর ও প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘদিনের নীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অ-বিশ্বজনীন এলাকায় প্রবেশের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিচারিক পরোয়ানা থাকা বাধ্যতামূলক।
ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের কড়া সমালোচনা করেন এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের বহিষ্কারের ঘোষণা দেন।
তিনি আরও হুঁশিয়ারি দেন, ইহুদিবিদ্বেষ দমনে যথেষ্ট পদক্ষেপ না নেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বরাদ্দ তহবিল কেটে দেওয়া হবে।
গত শুক্রবার তার প্রশাসন ঘোষণা দেয়, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইহুদি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ এনে প্রতিষ্ঠানটির জন্য নির্ধারিত ৪০০ মিলিয়ন ডলার সরকারি অনুদান বাতিল করা হয়েছে।